মণিপুরের সংকট: সংঘাতের কারণ! কে স্বাধীনতা চায়, আর কে সমাধান চায়?

ভারতের মণিপুরে ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে যে উত্তেজনা ও সংঘাত দেখা গেছে, তার মূল কেন্দ্রে রয়েছে দুটি বৃহৎ জাতিগত গোষ্ঠী: মেতেই এবং কুকি। এই সংঘাতের মূল কারণ জাতিগত, রাজনৈতিক এবং ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা।

height="auto"

মেতেই জনগোষ্ঠী:


✅ মেতেই গোষ্ঠী মূলত মণিপুরের উপত্যকায় বাস করে এবং তারা মূলত হিন্দু। তারা মণিপুরের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০-৫৩%।


✅ মেতেই জনগোষ্ঠী মূলত মণিপুরের ইম্ফল উপত্যকায় বাস করে। ইম্ফল মণিপুরের রাজধানী এবং এর আশেপাশের সমতল অঞ্চলগুলো মেতেইদের প্রধান আবাসস্থল।


✅মেতেইরা মণিপুরের ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, বিষ্ণুপুর এবং থৌবল জেলাগুলিতে কেন্দ্রীভূত। এই অঞ্চলগুলো সমতল এবং কৃষিকাজের জন্য উপযোগী।


✅ মেতেই সম্প্রদায়ের মূল দাবি হলো, তারা পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে বা বসবাস করতে পারে না, কারণ তারা সরকারি নীতির কারণে উপজাতি মর্যাদা পায়নি। তাদের দাবি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি, যাতে তারা আরও সুবিধা পেতে পারে, যেমন শিক্ষা, চাকরি এবং ভূমির অধিকার।


কুকি জনগোষ্ঠী:


✅ কুকি একটি উপজাতি গোষ্ঠী যারা মূলত মণিপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করে। তারা প্রধানত খ্রিস্টান।


✅ কুকি জনগোষ্ঠী মূলত মণিপুরের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে বাস করে। তারা প্রধানত মণিপুরের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত পাহাড়ি জেলাগুলিতে থাকে।


✅ কুকিদের বসবাসের প্রধান এলাকাগুলো হলো চূড়াচাঁদপুর (Churachandpur), কাংপোকপি (Kangpokpi), টেংনৌপাল (Tengnoupal), চন্দেল (Chandel), এবং সেনাপতি (Senapati)।

✅ কুকি জনগোষ্ঠীর অভিযোগ হলো, মেতেই গোষ্ঠী তাদের এলাকা ও জমির উপর আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে। কুকিরা মনে করে যে মেতেইদের উপজাতি স্বীকৃতি দিলে তারা পাহাড়ি জমিতে প্রবেশ করতে পারবে এবং এতে তাদের ভূমি অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


✅ এর পাশাপাশি, কুকিরা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের ভূমিকার বিরোধিতা করে এবং তাদের অধিকার রক্ষা করার জন্য লড়াই করছে।

ভূগোলগত বিভাজন মূলত পাহাড়ি ও সমতল অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, যা উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে ভূমি এবং প্রশাসনিক অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের কারণ।

Follow me for more.

সংঘাতের কারণ:


⬛ মেতেই সম্প্রদায়ের উপজাতি স্বীকৃতির দাবির বিরুদ্ধে


⬛ কুকি ও অন্যান্য পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর আপত্তি।ভূমি অধিকার, উন্নয়ন সংস্থান, এবং ধর্মীয় ও জাতিগত পার্থক্য।


⬛ ২০২৩ সালে কুকিদের এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় ভূমি উচ্ছেদ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা এই সংঘাতকে আরও তীব্র করে তোলে।


আলাদা হয়ে যাওয়া বা স্বাধীনতার দাবি:


⬛ কিছু কুকি গোষ্ঠী আলাদা রাজ্য বা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চায়, কিন্তু এর মানে পুরোপুরি স্বাধীন দেশ নয়। বরং, তারা নিজস্ব শাসন ব্যবস্থার অধীনে থাকতে চায়।


⬛ মেতেই গোষ্ঠী সাধারণত মণিপুরের অখণ্ডতা বজায় রাখার পক্ষপাতী, তবে তাদের উপজাতি স্বীকৃতির দাবি কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে।


সরকার সংঘাত বন্ধ করতে এবং দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগ নিলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। সেনা মোতায়েন করা হলেও উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত বিদ্বেষ চলমান রয়েছে।

1 / 4
2 / 10
3 / 10
4 / 10
5 / 10