অভিষেক চুপচাপ বসে শুনছিল। কিন্তু ‘ট্রিপ’ কথাটা শুনতেই হঠাৎ তার মনে একটা চিন্তা খেলে গেল।
ভুবনেশ্বর... পুরী...
হ্যাঁ, বেশিরভাগ মানুষই ভুবনেশ্বর গেলে পুরী ঘুরতে যায়।
অদিতির পরিবার নিশ্চয়ই পুরী গিয়েছিল!
তাহলে কি পুরী গেলে আবার ওর দেখা পেতে পারে?
অভিষেক আর ভাবতে পারল না, হুট করে বলে উঠল—
"না, আমরা দীঘা যাব না, আমরা পুরী যাব!"
সবাই অবাক হয়ে ওর দিকে তাকাল।
অরিন্দম কপাল কুঁচকে বলল, "পুরী? হঠাৎ করে পুরী বলছিস কেন?"
অভিষেক স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করল, "আরে পুরী আরও ভালো জায়গা। দীঘা তো সবাই গেছে, বারবার ওই এক জায়গায় গিয়ে লাভ কী? পুরীতে সমুদ্র, মন্দির, ঘোরার জায়গাও বেশি!"
কৌশানী একটু সন্দেহের চোখে তাকাল, "কিন্তু হঠাৎ করে তুই পুরী বললি কেন? কিছু প্ল্যান আছে নাকি?"
অভিষেক একটু হেসে বলল, "আরেহ! প্ল্যান আবার কী! পুরী ভালো লাগলো তাই বললাম!"
কিন্তু ও নিজেই জানে, ব্যাপারটা শুধুমাত্র পুরীর সৌন্দর্য নয়।
একটা অসমাপ্ত অনুভূতি ওকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ওখানে।
যদি সত্যিই... যদি ভাগ্যচক্রে আবার অদিতির দেখা পাওয়া যায়।
ভেতরের দ্বন্দ্ব
অভিষেক বাইরের মুখে যতই স্বাভাবিক দেখাক, ভিতরে ভিতরে এক অদ্ভুত টান অনুভব করছিল।
নিজের মনকে বোঝাতে চেষ্টা করল—
"এটা কি ঠিক হচ্ছে? একটা মেয়েকে মাত্র একবার দেখা, তারপর শুধু সেই স্মৃতির জন্য এত দূর পর্যন্ত যাওয়া?"
কিন্তু আরেকটা ভাবনাও ওর মাথায় আসছিল—
"ভুবনেশ্বর থেকে মানুষ বেশিরভাগই পুরী যায়... ওর পরিবারও নিশ্চয়ই পুরী ঘুরতে গিয়েছে... হয়তো ওকে আবার দেখতে পাব!"
তবে মাঝেমধ্যে একটা সংকোচও হচ্ছিল—
"ও আমার থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট... ওর খোঁজে যাওয়াটা কি ঠিক হচ্ছে?"
কিন্তু সব যুক্তি-বুদ্ধি, বাস্তবতা ছাপিয়ে একটা অনুভূতি ওকে পুরী যাওয়ার জন্য তাড়িয়ে নিয়ে চলল।
সুমন বলল, "ঠিক আছে তাহলে, এবার পুরী চল! কবে বেরোবো ঠিক কর?"
অভিষেকের মুখে চাপা হাসি, মনটা কেমন যেন উচ্ছ্বসিত।
ও জানে না, এই সফরে ও কী পেতে চলেছে...
কিন্তু একটাই আশা, হয়তো, পুরী গিয়ে হারিয়ে যাওয়া কিছু খুঁজে পাওয়া যাবে...